আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে প্রবাসীদের কষ্টের স্ট্যাটাস ও ক্যাপশন

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে প্রবাসীদের কষ্টের স্ট্যাটাস ও ক্যাপশনঃ বিশ্বের প্রায় বেশ কিছু দেশে শ্রমিক দিবস পালিত হচ্ছে যথাযথ ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে। বিশ্বের প্রায় শতাধিক দেশে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত হয়ে থাকে বৎসরের মে মাসের ১ তারিখ। বাংলাদেশ, ভারত, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ইথিওপিয়া,মিশর, কায়রো ইত্যাদি দেশগুলোতে শ্রমিক দিবস পালন করা হয় প্রতিবছর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের অনেক শ্রমিক ভাইয়েরা প্রবাসে তাদের শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন এবং দেশের জন্য বৈদেশিক রেমিটেন্স সংগ্রহ করছেন। পাশাপাশি নিজে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এবং পরিবারকে সহায়তা করছেন। এই এই দিনটিতে বিভিন্ন দেশে সরকারি ভাবে ছুটি ঘোষণা করা হয়ে থাকে এবং শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়।
শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা, তাদের ন্যায্য দাবি, বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন,গুলোতে তাদের ভূমিকা, এবং নির্দিষ্ট কর্ম ঘন্টা সহ যাবতীয় বিষয়গুলো শ্রমিকেরা এই দিনে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। আমরা তাদের প্রতি অনেক শ্রদ্ধাশীল এবং সবসময় তাদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করি যাতে তারা সঠিকভাবে তাদের শ্রমদান করতে পারেন এবং দেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে পারেন।
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস কেন পালন করা হয়?
আমেরিকাতে ১৮৮৬ সালে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য দাবি এবং নির্দিষ্ট কর্ম ঘন্টা নির্ধারণের জন্য একটি শহরে জমায়েত হয়েছিলেন। সে সময় আমেরিকান পুলিশর বাহিনী তাদের ছত্র ভঙ্গ করে দেন এবং চতুর্দিক থেকে ঘিরে ধরেন। সাথে সাথে গুলিবর্ষণ এবং বোমা বর্ষনের মাধ্যমে বেশ কিছু শ্রমিককে মেরে ফেলেন। সেই সময় শ্রমিকেরা তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় সংঘটিত হয়ে বিভিন্ন দেশের শ্রমিক সংগঠনের মাধ্যমে একযোগে বেশ কিছু দেশে আন্দোলন করা হয়। সর্বশেষ ১৯০৪ সালে বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন গুলো এবং সমাজতান্ত্রিক দল তাদের সমর্থনে শ্রমিকেরা আন্দোলনে নেমে পড়ে। ওই সময় তাদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। সেই সাথে সাথে শ্রমিকেরা মে দিবসের দিন সরকারি ছুটির জন্য দাবী জানিয়েছিলেন। বিভিন্ন দেশে তা মেনে নেওয়া হয়। সেই থেকে পহেলা মে শ্রমিক দিবস হিসেবে কার্যকর এবং নির্দিষ্ট ৮ ঘন্টা শ্রমদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পাশাপাশি সেই থেকে পহেলা মে শ্রমিক দিবস/ আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। বর্তমান সময়ে শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে এ বছরেও দিবসটি পালন করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে প্রবাসীদের ক্যাপশন
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের অনেক শ্রমিক ভাইয়েরা তাদের মেধা শক্তি ও শ্রেমের মাধ্যমে বিশ্বের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে দেশ ও জাতি উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছাতে সক্ষম হচ্ছে। কিন্তু আমাদের প্রবাসী শ্রমিকদের ভাইদের দেশে এবং বিদেশে এখনো লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে। পাশাপাশি তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের বঞ্চনার শিকার হতে হয়। এমনকি তারা প্রবাসে ও অবস্থান করেও তাদের পরিবার পরিজনদের সাথে সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে পারেন না। কিংবা কোন দুর্ঘটনা ঘটলে দেশে ফিরে আসার জন্য নানান ধরনের জটিলতার মধ্যে পড়তে হয়। বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অনেক শ্রমিক ভাই যাওয়ার পরে বিভিন্ন ধরনের জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। এ সকল সমস্যার সমাধানের জন্য বাংলাদেশী প্রবাসীরা বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিকভাবে সমস্যা গুলো সমাধানের জন্য পয়লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে রাজপথে নেমে আসেন। এবং তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের স্ট্যাটাস, ক্যাপশন শেয়ার করে থাকেন ।আমরা সেই সকল প্রবাসী ভাইদের জন্য কিছু উল্লেখযোগ্য ক্যাপশন প্রতিবেদনে তুলে ধরছি-
- “বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের যে সকল প্রবাসী ভাইয়েরা রয়েছেন আপনাদেরকে আজকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে সংগঠিত হয়ে সকল সমস্যার সমাধানের প্রতি সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি”- শুভ হোক আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস!1
- “দেশ ছেড়ে বিদেশের মাটিতে কত বছর হয়, তবুও আমাদের মনে যত সমস্যা আর যত ভয়। আজকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে সকলকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি”- আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস সফল হোক।
- “পহেলা মে শ্রমিক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের সকল শ্রমিক ভাইদেরকে অন্তরের অন্তরস্থল থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি”- মে দিবস সফল হোক,, সফল হোক।
- “আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আমাদের প্রবাসীদের সকলের একটাই দাবি দেশের টাকা পাঠানোর সহজ পদ্ধতি এবং সাশ্রয়ী চার্জ নির্ধারণ করতে হবে”।
- “শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন গুলোকে স্বাধীনতা প্রদান করতে হবে এবং সকল শ্রমিকের মাধ্যমে শ্রমিক ইউনিয়ন গুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে’।
- ‘আজ পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে প্রবাসীদের সুদৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করছি”- মে দিবস সফল হোক, সফল হোক।
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে প্রবাসীদের কষ্টের স্ট্যাটাস
প্রবাসীদের কষ্টের সীমা থাকে না। তাদের কষ্টের মূল কারণগুলো হলো পরিবারকে ছেড়ে বিদেশে অবস্থান করা। পাশাপাশি দেশকে ছেড়ে, দেশের মানুষকে ছেড়ে দীর্ঘদিন যাবত সেখানে অবস্থান করতে হয়। সাথে সাথে পরিবার পরিজনদেরকে ছেড়ে সেখানে নিজস্ব ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান থেকেও বিরত থাকতে হয়। মূলত এই দিক গুলোকে প্রবাসীরা করে কষ্ট অনুভব করে থাকেন। তার অফুরন্ত শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা এবং জটিলতার কারণে নানান ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। ফলে শ্রমিকেরা রেমিটেন্স পাঠানোসহ যথাযথ আইনগত ব্যবস্থার অবনতির শিকার হয়ে থাকেন এতে করে তাদের কষ্টের সীমা থাকে না। আমরা আমাদের প্রতিবেদনের নিচের অংশে প্রবাসীদের শ্রমিক দিবসের কষ্টের স্ট্যাটাস গুলো উল্লেখ করছি-
- ‘আজকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আমরা ছুটি পালন করছি ঠিকই কিন্তু সেই ছবি আমাদেরকে আমাদের প্রয়োজনদের সাথে একত্রিত হওয়ার কোন সুযোগ করে দেয় নি”।
- “ ১ লা মে আজ আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস ইচ্ছে করছে দেশে ফিরে যেতে পরিবার-পরিজনদের সাথে সময় কাটাতে”।
- ‘এক বুক স্বপ্ন নিয়ে এসেছি প্রবাসে, অর্থ উপার্জন করছি প্রচুর পরিমাণে কিন্তু মনের মধ্যে একটা কথা বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের মানুষ কি সুখে আছে? আমরা অনেক কষ্ট করছি এখানে।”
- “আমরা এখানে প্রবাসে জীবন বাজি রেখে শ্রম দিয়ে থাকে, যাতে দেশের মানুষ এবং দেশের উন্নয়ন সাধিত হয় কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় কুচক্ড়ি মহল প্রবাসীদের অর্থ আত্মসাৎ করার চেষ্টা করে।”
- “আমরা প্রবাসে যতটা কষ্ট করি তার চেয়ে বেশি কষ্ট পাই যখন আমাদের আপনজনেরা আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে থাকেন।”
- “সবাই স্বার্থের জন্য পাগল কিন্তু আমরাই একমাত্র বাঙালি যারা দেশের জন্য পাগল। দেশকে ভালবেসে আমরা শ্রমিকেরা দিনরাত নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নকে তারা নিতে করার চেষ্টা করি।”