Ramadan 2025

শবে কদরের নামাজ কত রাকাত, নামাজের নিয়ম ও দোয়া ২০২৫

আরবি বর্ষপঞ্জিকা মতে পবিত্র শাবান মাস এর পরই হল পবিত্র মাহে রমজান এবং তার পরবর্তী মাস হল ছাওয়াল মাস। বর্তমান সারাবিশ্বের মুসলমান ধর্ম অনুসারীরা পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে সিয়াম সাধনা করছেন। আপনারা অনেকেই পবিত্র রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাত্রি গুলোতে বিশেষ একটি রাত মুসলমানদের জন্য মহিমান্বিত একটি রাত লাইলাত লাইলাতুল কদর এর উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। সে সম্পর্কে ধারণা পেতে অনলাইনে অনুসন্ধান করছেন। যেহেতু এটি একটি মহিমান্বিত রাত। এই রাতে বেশি বেশি ইবাদত করার মধ্য দিয়ে মহান রাব্বুল আলামীনকে সন্তুষ্ট করার সর্বচ্চো চেষ্টা আমাদের করতে হবে। এটি এমন একটি রাত যা হাজার মাস অপেক্ষা অধিবতর উত্তম।

 সম্মানিত পাঠক, আপনারা অনেকেই লাইলাতুল কদর শবে কদর এর রাত্রির পালনের জন্য মনস্থির করেছেন। আর মাত্র কয়েকদিন পর থেকেই পবিত্র লাইলাতুল কদরের রাতগুলি আমাদের মাঝে উপস্থিত হবে। অনেকেই পবিত্র রমজান মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে অর্থাৎ২৭শে রমজানে লাইলাতুল কদর তালাশ করেন কিন্তু এর সম্পর্কে হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে শুধুমাত্র ২৭ শে রমজানের রাত্রিতে নয় বরং রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাত্রিগুলোতে পবিত্র লাইলাতুল কদর  হতে পারে। বিভিন্ন হাদিসে রমজানের  ২৭ তারিখ রাত্রিতে পবিত্র লাইলাতুল কদর প্রার্প্তির কথা ইঙ্গিত করেছেন।

লাইলাতুল কদর বা শবে কদরের দোয়া সমূহ

পবিত্র মাহে রমজানের ইবাদতগুলোকে আল্লাহতায়ালা ২৭ গুণ থেকে ৭০০গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে দিয়ে বান্দাদের আমলনামায় দিবেন। মহান রাব্বুল আলামিন তার সকল বান্দাদের জান্নাতে প্রবেশ করানোর জন্য বিশেষ এই মাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তার অফুরন্ত ভান্ডার থেকে। লাইলাতুল কদর বান্দাদের জন্য আরেকটি শেষ বিশেষ অফার দিয়ে রেখেছেন। আমরা এই রাতে বেশি বেশি ইবাদতের মধ্য দিয়ে মহান রব্বুল আলামীনের কাছে নিজেকে সোপর্দ করে দেবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সকলের ইবাদতগুলোকে যেন কবুল ও মঞ্জুর করেন। সেই সাথে পবিত্র এই মহিমান্বিত রাতে বেশি বেশি দোয়া পাঠ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই আমরা প্রতিবেদনের এই অংশে কিছু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দোয়া উল্লেখ করছি। আপনারা এই দোয়া গুলো এই রাতে বেশি বেশি আমল করার চেষ্টা করব।

رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِىْ قُلُوبِنَا غِلًّا لِّلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ

বাংলা উচ্চারণ: “রব্বানাগফির লানা- ওয়া লিইখ্ওয়া-নিনাল্লাযীনা সাবাকূনা- বিল ঈমা-নি ওয়ালা- তাজ‘আল ফী কুলূবিনা- গিল্লাল লিল্লাযীনা আ-মানূ রব্বানা- ইন্নাকা রাঊফুর রহীম।”

رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

বাংলা উচ্চারণ: “রাব্বানা ইন্নানা আমান্না ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ক্বিনা আজাবান নার।”

رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ

বাংলা উচ্চারণ: “রাব্বানা জ্বালামনা আংফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানাকুনান্না মিনাল খাসিরিন।”

رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْأَبْرَارِ

বাংলা উচ্চারণ: “রাব্বানা ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া কাফফির আন্না সায়্যিআতিনা ওয়া তাওয়াফফানা মাআল আবরার।”

লাইলাতুল কদর বা শবে কদরের নামাজ বা সালাত আদায়ের নিয়ম

মহিমান্বিত এই রাত পেতে গেলে আমাদেরকে অবশ্যই শবে কদরের রাতের সিংহভাগ অংশ ইবাদত করতে হবে।রাতে এশার সালাত ও তারাবির সালাত আদায়ের পর বেতের সালাত আদায়ের পূর্বে লাইলাতুল কদরের সালাত আদায় করতে হবে। লাইলাতুল কদরের সালাত অনেকেই ১২ রাকাত আদায় করে থাকেন আবার অনেকেই ৮ রাকাত আদায় করেন। এ রাতের সালাত আদায়ের জন্য প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পড়ে সূরা কদর, আয়াতুল কুরসী মিলিয়ে পড়তে হবে। পাশাপাশি এই সালাত আদায়ের জন্য প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে আপনি যে সূরা গুলো পাঠ করেন সেগুলো পাঠ করতে পারেন। লাইলাতুল কদরের রাতে আপনি সালাতুল তাসবিহ, সালাতুল হাজত, সালাতুল তাওবা আদায় করে নিতে পারেন।

লাইলাতুল কদর বা শবে কদরের নামাজ বা সালাত আদায়ের নিয়ত

শবে কদরের সালাত আদায়ের জন্য আপনি বাংলায় কিংবা আরবিতে নিয়ত করে নিতে পারেন। আপনি যদি নিয়ে সঠিক ভাবে তা করতে না পারেন তাহলে বিসমিল্লাহ্ বলেই দাঁড়িয়ে নামাজ শুরু করে দিতে পারেন। লাইলাতুল কদরের সালাত আদায় করার জন্য বিশেষ কোনো নিয়ম নীতি নেই। সাধারণত আমরা যেভাবে সালাত আদায় করি সেভাবেই লাইলাতুল কদরের সালাত আদায় করা যাবে। তবে এক্ষেত্রে বলা রাখা যায় বলে রাখা যায় যে যেহেতু শবে কদরের সালাতকে তাহাজ্জুদের সালাতের সাথে তুলনা করা হয়েছে।সে ক্ষেত্রে আপনি বিশেষ বিশেষ দোয়া পাঠ করতে পারেন শবে কদরের এই রাত্রে।

 শবে কদরের সালাতের আরবি নিয়ত-

“নাওয়াইতুআন্ উছল্লিয়া লিল্লা-হি তা‘আ-লা- রাক‘আতাই ছালা-তি লাইলাতুল কদর-নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কা‘বাতিশ্ শারীফাতি আল্লা-হু আকবার”।

শবে কদরের নামাজ কত রাকাত?

শবে কদর বা লাইলাতুল কদরের সালাত কত রাকাত তার নির্দিষ্ট করে কোথাও উল্লেখ নেই। তবে এ রাত্রে ১২ রাকাত সালাত আদায় করা উত্তম। যেহেতু এটি নফল ইবাদত সে ক্ষেত্রে দুই রাকাত করে আপনি যত খুশি সালাত আদায় করে নিতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে সূরা ফাতিহার সাথে সূরা কদর, আয়াতুল কুরসি, সূরা ইখলাস মিলিয়ে পড়তে হবে। অনেকেই পবিত্র এই মহিমান্বিত রাতে ০৮ রাকাত সালাত আদায় করে থাকেন। এই রাত্রে ০৮ রাকাত সালাত আদায় করাও উত্তম। এই মহিমান্বিত রাতে আপনি কোরআন তেলাওয়াত থেকে শুরু করে যাবতীয় মুসলিম ধর্মীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারেন। আমরা মহিমান্বিত এই রাতে বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগীর মধ্য দিয়ে মহান রাব্বুল আলামিনকে খুশি ও সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করব এবং আমাদের জীবনের পূর্ববর্তী গুনাহগুলোকে মহান রব্বুল আলামীনের কাছ থেকে মাফ চেয়ে নিব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *