Ramadan 2025

রমজানের শুভেচ্ছা মেসেজ ও উক্তি ২০২৫। রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত

আলহামদুলিল্লাহ!! আমরা আরেকটি মহিমান্বিত মাসের খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। আর কিছুদিন পরেই মহিমান্বিত সেই মাস, রমজান মাস! আমাদের সামনে উপস্থিত হতে চলেছে। এই মাসের গুরুত্ব এবং ফজিলত সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা রয়েছে। এ রমজান মাসটি পবিত্র মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস। এই মাসে এত পরিমাণে রহমত রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে যারা জানে তারা কখনোই এই মাসটিকে অবহেলার সহিত নষ্ট করবে না। রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করা সকলের নৈতিক দায়িত্ব। রমজানের গুরুত্ব এবং ফজিলত সম্পর্কে আপনার বন্ধুবান্ধব সহ পরিবার পরিজনকে জানানো আপনার নৈতিক দায়িত্ব। ইসলামের যে পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে তার মধ্যে রমযান একটি। ইসলামে পাঁচটি স্তম্ভ হচ্ছে কলেমা, নামাজ, রোজা,হজ্ব এবং যাকাত। আপনি যদি মুসলমান হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই পাঁচটি স্তম্ভ মেনে নিয়ে আমল করতে হবে।

সম্মানিত পাঠক, বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রমজানের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের মেসেজ প্রদান করা হয়। তাই আমরা আজকে আমাদের প্রতিবেদনে রমজানের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের মেসেজ আপনাদের সামনে শেয়ার করব। এই মেসেজ গুলো যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনারা আপনাদের পরিবার পরিজনসহ বন্ধু-বান্ধবদেরকে এই মেসেজগুলো পাঠাতে পারবেন। আপনি যদি মুসলিম পরিবারের সদস্য হন তাহলে রমজানের গভীরতা সম্পর্কে আপনার জানা অত্যন্ত জরুরী। এই রমজানে একটি ভালো কাজ করার বিনিময়ে আপনি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারেন। সুতরাং আপনি যদি একটি রমজানের সুন্দর বার্তা কাউকে প্রধানের মাধ্যমে তাকে রমজানের বিষয়ে অবহিত করে দ্বীনের পথে নিয়ে আসতে পারেন। সেই ব্যক্তিটি ইবাদতের মাধ্যমে যে সওয়াব পাবে সমপরিমাণ সওয়াব আপনার আমলনামায় ও যুক্ত হবে ।

রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত

রমজান মাসকে মহান রাব্বুল আলামিন অন্যান্য মাসের তুলনায় অনেক বেশি ফজিলতময় মাস হিসেবে ঘোষণা করেছেন। একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, রমজান মাস হাজার মাসের চেয়ে অতি উত্তম মাস। সুতরাং বুঝতে পারছেন রমজান মাস  একজন মুসলমানের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ মাস। এই রমজান মাসেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  মক্কা বিজয়ের জন্য যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। এছাড়াও এই রমজান মাসেই বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে সারারাত সালাত এবং জিকির করে কাটিয়ে দিয়েছিলেন এবং তিনি কোনদিন রোজা ভঙ্গ করেননি। আমরা শেষ নবীর উম্মত হিসেবে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর আদর্শ অনুযায়ী রমজান মাসে রোজা রাখা সহ সালাত আদায় এবং জিকির আজগারের মধ্য দিয়ে রমজান মাস থেকে অতিবাহিত করব।

আল্লাহ তাআলা বলেন:

﴿ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ﴾ [البقرة:183].

হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর।’ (সূরা বাকারা, ১৮৩ আয়াত)।

পবিত্র মাহে রমজানের ক্যাপশন

পবিত্র মাহে রমজান মাসে মুসলিম উম্মাদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার লক্ষ্য করা যায়। কেননা এই মাসে কুরআন নাযিল করা হয়েছিল মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসমান থেকে বাণী আসতো। এই মাসেই রয়েছে রহমত, মাগফেরাত এবং নাজাত এর মত বিশেষ দিকগুলো। রমজান মাস একটি পরিপূর্ণ ইবাদত পূর্ন মাস। আত্মশুদ্ধি করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করা। নিজেকে পরিশুদ্ধ করার উত্তম সুযোগ। আমরা আমাদের প্রতিবেদনের এই অংশে পবিত্র মাহে রমজানের কিছু ক্যাপশন আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি। যেগুলো আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।

  • “ রোজাদার ব্যক্তিগণ কিয়ামতের দিন জান্নাতের একটি বিশেষ দরজা রাইয়ান দরজা দিয়ে প্রবেশ করবেন।”
  •  আল্লাহ তায়ালা বলেছেন “রোজা শুধু আমার জন্য এবং আমি এর উত্তর উত্তম প্রতিদান দেব।”
  • “রোজাদার ব্যক্তিরা কখনো ঝগড়া বিবাদ কিংবা অশ্লীল কথাবার্তা ব্যবহার করবেন না।”
  • “সেহরি একটি বরকতময় খাবার তাই এটি কখনো পরিত্যাগ করবেন না হাদিস শরীফে আছে এক ঢোক পানি খেয়ে হলেও সেহরি করবেন।”
  • “সেহরি আমাদের জন্য একটি কল্যাণকর ও বরকতময় খাবার যেটি আমাদের পরবর্তী দিনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি হয়ে দাঁড়ায়।”
  • রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি রমজানে রোজা রাখে এবং তার শেষে ঈদুল ফিতরের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিনা হিসাবে পুরস্কার রয়েছে”—– ইবনে মাজহা
  • “আমাদের জীবনে এই রমজানে হতে পারে শেষ রমজান তাই রমজানের মাহাত্ম্যকে ধারণ করুন এবাদত বন্দেগীতে নিজেকে মশগুল করে রাখুন।”
  • “রমজান মাস আমাদের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে প্রতি বছরই আসে, তাই নিজেকে পাপ মুক্ত করতে রমজানের ত্রিশটি রোজা পালন করুন”— সবাইকে -“রমাদান মোবারক”!!!
  • সহিহ বুখারীতে একটি হাদিস রয়েছে, “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখে তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়”
  • “রমজান মাস মাসে দুটি আনন্দ রয়েছে একটি আছে ইফতারের সময়টা আরেকটি হচ্ছে তার রবের সাথে সাক্ষাতের সময়”— ——-সহিহ বুখারী।

পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা মেসেজ

রমজানের বারতা ছড়িয়ে দিতে আমাদেরকে একে অপরজনের মধ্যে মেসেজ আদান-প্রদান করতে হবে। রমজানের মাহত্ব সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। বর্তমান অনলাইনের যুগে আপনি যদি একটি সুন্দর মেসেজ তৈরি করে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারেন তাহলে আপনি অশেষ সওয়াবের ভাগীদার হবেন। এই সুবর্ণ সুযোগ  নষ্ট না করে আমাদের প্রতিবেদনে যে সুন্দর এসএমএস গুলো দেওয়া হলো এগুলো আপনি শেয়ার করে দিতে পারেন।

  • “রমজানের আগমনে পুলকিত হয়েছে আমাদের হৃদয়, আল্লাহ যেন ইবাদত বন্দেগী কবুল করে নেয়”–আমিন
  • “জগতের সব ব্যস্ততা বলে ভুলে আসুন সবাই মিলে, একসাথে রমজান মাসে ভালো ভালো কাজ করি, দ্বীনের পথে চলি।”—সবাইকে– “রমজানুল মোবারক”!!
  • “এসেছে রমজান বরণ করে নিন, ইবাদত বন্দেগীর মধ্যে দিয়ে নিজেকে ডুবিয়ে রাখুন”–রমজানের অগ্রিম শুভেচ্ছা———“রমজানুল মোবারক!!”
  • “পবিত্র মাহে রমজান ফিরে আসুক বারবার আমাদের মাঝে,সকল ভুল-ত্রুটি অন্যায় মুছে যাক  জীবন থেকে।”
  • “পবিত্র মাহে রমজান ঢাল স্বরূপ যা মানুষকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা রক্ষা করে”।– সবাইকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা—– “রমজানুল মোবারক”!!!
  •  “আবার এসেছে ইফতারের সময়,  সবার মাঝে আনন্দের সাথে খাবার খাবার ভাগাভাগি করে  খাওয়ার।”
  • “রমজান আবার এলো ফিরে আমাদের মাঝে, জান্নাতের দরজা যেন গেল খুলে”।

পবিত্র মাহে রমজান নিয়ে উক্তি

সূর্যোদয়ের পূর্ব থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকার নামই হচ্ছে রোজা।

রোজা শুধু একটি নামই নয় এর মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করা যায়। নিজের আত্মাকে সংযত করার শিক্ষা পাওয়া যায়। মাহে রমজানের রোজার মাধ্যমে আমাদেরকে অনেক কিছু শিক্ষা দেয়। মিথ্যা কথা বলা, অন্যায়- অত্যাচার করা, অবিচার করা, সুদ- ঘুষ ইত্যাদি থেকে নিজেকে বঞ্চিত করার নামই হচ্ছে রোজা। সুপ্রিয় পাঠক আমরা আমাদের প্রতিবেদনের এই অংশে পবিত্র মাহে রমজান নিয়ে কিছু উক্তি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি।

  • “সেহরি হল মোবারক খাবার, খাবার তালিকা থেকে কখনো বাদ দিও না”—- তিরমিজি
  • “সেহরি খান কারণ সেহরিতে বরকত রয়েছে”—— সহীহ মুসলিম
  • “রমজান মাসের শেষে ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে হবে, এই দিনটি হল উপহার পাওয়ার দিন”——– বুখারী শরীফ
  • “ রমজানের শেষ রাতে আল্লাহ তায়ালা অবিশ্বাসীদের গুনাহ মাফ করেন এবং তাদের মুক্তি ঘোষণা করেন”– সহিহ মুসলিম
  • “একবার এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইসাল্লাম কে বলেছিলেন, হে রাসুল! আমরা কি সেহরি খাওয়ার সময় দেরি করবো। রাসূল সাঃ বলেছিলেন “এটি তোমাদের মধ্যে অত্যন্ত বরকতপূর্ণ সময়”——– বুখারী শরীফ

আসুন সবাই মিলে রমজানের মাহাত্বকে ছড়িয়ে দেই। একে অপরকে রমজানের বিষয়ে উৎসাহিত করে তুলি। কারণ আমাদের জীবন ক্ষণস্থায়ী । সামনের রমজান পর্যন্ত আমরা পৃথিবীতে বেঁচে থাকবো কিনা আমরা তা বলতে পারি না। তাই আমাদের এই রমজান মাসেই রমজানের ইবাদত গুলোকে পরিপূর্ণভাবে পালন করি। খোদাতালার কাছে নিজেকে সমর্পণ করি। নিজের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করি। আশেপাশে গরীব দুঃখী মানুষদের পাশে দাঁড়াই। নিজের আনন্দ অনুভূতিকে সমানভাবে ভাগ করে নিন। বেশি বেশি দান সদগাহ করি। নিয়মিত যাকাত প্রদান করি। আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *