রমজান ও ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানালো আমিরাত ২০২৫

সিয়াম সাধনা করার আমাদের প্রত্যেকটি মুসলমান নর-নারীর জন্য একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মহান আল্লাহ সুবহানাল্লাহ তায়ালা রমজান মাসের সিয়াম সাধনা করার কথা বলেছেন, তিনি বলেছেন- “তোমাদের মধ্যে যারা রমজান মাস পাবে, তারা যেন এই মাসে সিয়াম পালন করবে”- (সূরা বাকারা ১৮৫)।আমরা মুসলমান হিসেবে সকল অবস্থায় আল্লাহ তায়ালার দাসত্ব করা উচিত। ইবাদত বন্দেগীর মধ্য দিয়ে মহান রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভ করা আমাদের একান্ত কাম্য হওয়া । পবিত্র মহাগ্রন্থ কোরআন মাজীদে সম্পর্কে বলা রয়েছে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, “একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্যই আমি জ্বীন এবং মানুষ জাতিকে আমি সৃষ্টি করেছি”। আমি তো তাদের কাছে কোনো জীবিকা চাই না এবং এটাও চাইনা যে তারা আমার আহার বা খাবার যোগাবে।– সূরা যারিয়াত
রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত
পবিত্র মাহে রমজান মাসে গুরুত্বও ফজিলত অনেক বেশি। তাই আমাদেরকে পবিত্র রমজান মাসে বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগির মধ্য দিয়ে আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করতে হবে। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেন, “রমজান মাসে যে ব্যক্তি একটি ভালো কাজ করলো অথবা একটি নফল আদায় করল, সেজন্য অন্যান্য মাসের একটি ফরজ আদায় করলো। এ মাসে ০১ টাকা দান করলে অন্যান্য মাসের ৭০ টাকা দানের সাওয়াব পাওয়া যায়। পাশাপাশি একটি ভালো কাজ করলে অন্যান্য মাসের ৭০ টি ভালো কাজের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হচ্ছে তারাবির নামাজ নামাজ। তারাবির নামাজ আমাদেরকে যথাসময়ে আদায় করতে হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হচ্ছে সালাতুত তাসবীহ এ ব্যাপারে আমাদের যত্নশীল এবং মনোযোগী হতে হবে। পবিত্র মাহে রমজান মাসে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেছেন রমজানের রোজা ও কোরআনতেলোয়াত রোজাদার বান্দাদের জন্য সুপারিশ করবেন। রোজা বলবে হে আল্লাহ! “আমি এই লোককে রোজার দিন পাণাহার থেকে বিরত এবং জৈবিক চাহিদা চরিতার্থ করা থেকে বিরত রেখেছি। আর কুরআন বলবে হে আল্লাহ! আমি তাকে রাত্রিবেলা ঘুমানো থেকে বাধা দান করেছি। ওই ব্যক্তির সকল গুনাহ মাফ করে দিয়েন। তখন মহান রাব্বুল আলামিন ওই ব্যক্তির সকল গুনাহ মাফ হতে থাকে জান্নাত দিয়ে দিবেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি
বাংলাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্ম অনুসারী। রমজানের রোজা ও রমজানের বিশেষত্ব নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বেশ কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। প্রতিবছর বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করে থাকেন এ বছর ও গত ২৭ শে জানুয়ারি বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন তাদের আনুষ্ঠানিক সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে একটি সময়সূচি প্রকাশ করছেন। যে সময়সূচী অনুযায়ী রমজানের ৩০ রোজা পালিত হবে। অবস্থান অনুযায়ী সত্করকতার জন্য়ে ৯ মিনিট যোগ করে অথবা বিয়োগ করে সিয়াম গুলো পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন। আমরা আমাদের প্রতিবেদনের এই অংশে বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ২০২৫ সালের রমজানের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করছি।
রমজান ও ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানালো আমিরাত ২০২৫
সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০২৫ সালের সম্ভাব্য রমজান ও ঈদের সময় সূচি প্রকাশ করেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের জ্যোতিবিজ্ঞানী ইব্রাহিম আল জারওয়ান আরব আমিরাতের চেয়ারম্যান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি মনে করেন আগামী মার্চের ০১ তারিখ থেকে পবিত্র মাহে রমজান শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ গুলোতে রমজান শুরু হয় খালি চোখে চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে। তবে দেশটিতে জ্যোতি বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে রমজানের রোজা সম্ভব বলে ঘোষণা করা হয়। বর্তমান সময়ে মধ্যপ্রদেশের দেশগুলোতে চাঁদ দেখা ও রমজানের শুরু হওয়ার দিন গুলো আধুনিক যন্ত্রপাতির সহায়তা নেওয়া হয়।মধ্যপ্রাচের দেশগুলো থেকে আমাদের বাংলাদেশে একদিন পরেই পবিত্র মাহে রমজান ও ঈদ উদযাপিত হয়ে থাকে। কারণ ভৌগোলিক সীমারেখার কারণে আমরা মধ্যপ্রাচের দেশগুলোর থেকে একদিন পিছিয়ে আছি।জ্যোতি বিজ্ঞানী ইব্রাহিম আল জারওয়ান বলেন ২০২৫ সালের রমজান মাস যদি ২৯ দিনে শেষ হয় তাহলে ঈদুল ফিতর পালিত হবে ৩০ শে মার্চ আর যদি রমজান মাস ৩০ দিনে শেষ হয়ে থাকে তাহলে ৩১ শে মার্চ ঈদুল ফিতর পালিত হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই একই হিসাব যদি ২৯ দিনে রোজা সম্পন্ন হয় তাহলে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হবে ৩১ শে মার্চ আর যদি ৩০ দিনে রোজা পূর্ণ হয়ে থাকে তাহলে পবিত্র ঈদুল ফিতর হবে ০১ এপ্রিল।
রমজানের এবং ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা একটি ইবাদত। আমরা এই ইবাদতের অংশীদার হয়ে পবিত্র সিয়াম গুলো পালন করব। বর্তমানে আধুনিক যুগে বিশ্বের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে চাঁদ দেখা হয়ে থাকে। আমরা সেই সময়সূচী অনুযায়ী পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং পবিত্র মাহে রমজান পালন করব। রমজানে শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার ইবাদত বন্দেগী বিষয়টা যেন এরকম না। আমাদেরকে রমজান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। এই শিক্ষা নিয়ে বাকি ১১ মাস ইবাদত বন্দেগীর মধ্য দিয়ে মহান রাব্বুল আলামিনকে সন্তুষ্ট করতে হবে। মহান রাব্বুল আলামিন এ সম্পর্কে বলেন, “তোমরা সিয়াম পালন কর,আমি এর উত্তম প্রতিদান আমার নিজ হাতেই দেব”। সুতরাং আল্লাহ যদি আমাদের উত্তম পুরস্কার দেন সে পুরস্কার অবশ্যই জান্নাতের সর্বোচ্চ উত্তম মাকাম হতে পারে। এই পবিত্র রমজান মাসে আল্লাহতালা জান্নাতের সমস্ত দুয়ার খুলে দেন এবং জাহান্নামের সকল দরজা বন্ধ করে দেন। পাশাপাশি শয়তানদেরকে বন্দী করে রাখেন। যাতে বান্দারা রমজান মাসে বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগী করতে পারে। মহান রাব্বুল আলামিন সকলের ইবাদতগুলোকে কবুল করে নিন। রোজা গুলোকে কবুল করে নিন। জীবনের সমস্ত গুনাগুলোকে মাফ করে দিন। আমিন ।