Status-Caption-SMS

মেয়েদের জীবন ও আবেগ নিয়ে কিছু কথা 

মেয়েরা মায়ের জাতি কিন্তু আমরা হড়হামেশাই সে কথা ভুলে যাই। মেয়েদেরকে দেখলে বিভিন্ন দলের বিভিন্ন ধরনের ট্রল করতে থাকি। কখনোই ভাবি না সেও আমার আপনার মত কারো না কারো বোন। মেয়ে মানুষের জীবন পুরুষ মানুষের জীবন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কেননাআপনারা একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন মেয়ে মানুষের জীবন কেন আলাদা? পুরুষ জাতি সারাজীবন বাবার বাড়িতেই অবস্থান করে থাকেন কিন্তু মেয়েরা ছোটবেলা থেকেই বাবার বাড়িতে পরবর্তীতে বাবার বাড়ি ত্যাগ করে শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান নেয়। এটি বাংলাদেশের রীতি এবং মুসলমানদের ধর্মীয় রীতি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রীতি-নীতির প্রচলন থাকলেও বাংলাদেশে এই রীতি প্রচলিত রয়েছে।

আপনারা অনেকেই মেয়েদের জীবন, আবেগ, এদের কষ্টের কথা গুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করার জন্য সুন্দর ভাবে স্ট্যাটাস কিংবা কথা কিছু কথা শেয়ার করতে আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন। এ কারণে অনলাইনে এই বিষয়ে জানার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট অনুসন্ধান করে থাকেন। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করার চেষ্টা করে থাকি। পাশাপাশি অনলাইনে বিভিন্ন ভিজিটরদের কাঙ্খিত তথ্য বা বিষয়ে সহায়তা প্রদানের জন্য প্রতিনিয়ত প্রতিবেদন আপলোড করে থাকে। আমরা আমাদের আজকের প্রতিবেদন তৈরি করেছি আপনাদের প্রয়োজন অনুযায়ী মেয়েদের জীবন ও আবেগ নিয়ে কিছু কথা দিয়ে। এ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য উপস্থাপন করব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

মেয়েদের কষ্টের কিছু কথা

মেয়ে মানুষ পুরুষ মানুষের চেয়ে নরম মনের অধিকারী হয়ে থাকেন। তারা অল্প একটু কষ্ট পেলেই কান্না করে ফেলে। পাশাপাশি তাদের নমনীয়তা পুরুষদেরকে আকৃষ্ট করে থাকে। নরম স্বভাবের হওয়ার কারণে কঠিন বাস্তবের এই পৃথিবীতে তারা প্রতিনিয়ত ব্যথা বেদনার সম্মুখীন হন। তাদের জীবনটা স্বাভাবিকভাবে চিন্তা করার মত বা স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করার মত নয়। তাদেরকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সংগ্রাম এবং সহনশীলতার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করতে হয়। বিয়ের আগে বাবা-মায়ের নির্দেশনা মোতাবেক চলাফেরা করার প্রয়োজন পড়ে পাশাপাশি বিয়ের পরে স্বামীর এবং শশুর শাশুড়ির কথা মতো চলাফেরা করতে হয়। বাংলাদেশ পুরুষ শাশিত সমাজ ব্যবস্থা সে কারণেই নারীদের প্রতি পুরুষের শাসন ব্যবস্থা সবসময়ই দৃড়। নিম্নে মেয়েদের কিছু কষ্টের কথা উল্লেখ করছি-

  • “বাবার বাড়িতে ছিলাম যখন ছিল কত হাসিখুশি, শ্বশুরবাড়িতে এসে আমার দেখতে ইচ্ছে হয় শুধু ছেলের মুখের হাসি”।
  • “মাকে না দেখলে আমি একটি দিনও থাকতে পারতাম না অথচ সেই মাকে ছেড়ে আমি কতদিন রয়েছি শশুর বাসায়”
  • “বাবার কথা যখন মনে পড়ে নিজের অজান্তেই যেন চোখ দিয়ে পানি ঝরে, ফোন করে যখন বাবার সাথে কথা বলি একটু হলেও মনে পাই শান্তি”
  • “বিয়ের দিনে বিদায়বেলায় বুকটা যেন যাচ্ছিল ছিড়ে,যেন বুকটাকে কেউ পাথর দিয়ে মারছিল তিলে তিলে”
  • “আজকে মনটা আমার অনেক খারাপ, বাবার বাড়ি যাব বলে আমার প্রিয় স্বামী নিয়ে যেতে চেয়েছিল কিন্তু সময়ের অভাবে নিয়ে যেতে পারল না। আমার হলো না মায়ের মুখখানি দেখা”
  • “বিবাহিত জীবন মেয়েদের জন্য একটি দুনিয়ার জাহান্নাম, আর অবিবাহিত জীবন যেন দুনিয়ার জান্নাত”।

মেয়েদের ভালোবাসা নিয়ে কিছু কথা

মেয়েরা যাদেরকে ভালোবাসে তাদেরকে মন থেকেই ভালোবাসে। যাদের প্রতি একবার আকৃষ্ট হয়ে পড়ে শত চেষ্টা করলেও সে তাকে ভূলতে পারেনা। সে কারণেই আমরা অনেকেই লক্ষ্য করে থাকি যে মেয়েরা কোন ছেলেকে ভালবাসলে সেই ছেলের জন্য জীবন পর্যন্ত বিসর্জন দিয়ে দেয়। তাদের শভ্রময় হৃদয়ে যাকে একবার স্থান দিয়ে থাকে তাকে আর কোনোভাবেই সেই হৃদয় থেকে বের করে দিতে চায় না। বিবাহিত জীবনে সন্তানদের প্রতি তাদের ভালোবাসা এতটাই প্রখর থাকে যে নিজের জীবনের প্রতি কোন মায়া দয়া না করে সন্তানের প্রতি সমস্ত ভালোবাসা ঢেলে দেয়। অনেক মা রয়েছে যারা সন্তানকে না খাইয়ে কোনদিন নিজের খাবার গ্রহণ করে না। সন্তান কোথাও গেলে সেই মা সন্তান বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকে। মেয়েদের ভালোবাসা এরকমই হয়ে থাকে। শ্বশুর বাড়িতে পড়ে থাকলেও মা বাবার প্রতি তাদের অকৃত্রিম ভালবাসার রয়ে যায়।

  • “কাউকে ভালবাসলে ভালবাসার মত ভালবাসবে, না হলে নিজেও প্রতারিত হবে অন্যকেও প্রতারিত করবেন”।
  • “সম্পর্কের গভীরতা কতটুকু তা একজন সত্যিকারের প্রেমিকাকে লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন”।
  • “হৃদয়ে লেনাদেনা এপার এবং ওপার দুই পারতেই বজায় রাখার চেষ্টা করে মেয়েরা কাউকে ভালোবেসে থাকে। তারা বলে থাকেন এই পৃথিবীতে তোমাকে না পেলেও আমি পরকালে তোমাকে পেতে চাই”।
  • “কঠিন বাস্তবের এই পৃথিবীতে তোমার আমার ভালবাসা পূর্ণতা না পেলেও পরকালে পূর্ণতা পাবে এই আশা আমাদের”।
  • “আমি বারবার পেতে চেয়েছি তোমাকে, তোমার ভালোবাসা, তোমার সাথে বাকিটা জীবন কাটাতে”।
  • “ভালোবাসা যত গভীর হয় সম্পর্কে গভীরতা ততটা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে একজনের জীবন আর একজনের জীবন হয়ে যায়। একজন ব্যথা পেলেই আর একজন এমনিতেই ব্যাথা পায়।”

মেয়েদের আবেগ নিয়ে কিছু কথা

আমাদের সমাজে বিভিন্ন আবেগী মেয়েদের লক্ষ্য করা যায়। সাধারণত স্বল্পবয়সী কিশোরী মেয়েদেরকে বেশি আবেগী হতে দেখা যায়। তারা সবেমাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছে অথবা স্কুলে পড়াশোনা করছেন এই সকল মেয়েরা আবেগি স্বভাবের হয়ে থাকে। কারণ তারা সম্প্রীতি সব কিছু বুঝতে শিখেছেন কিন্তু সবকিছুকে অনুধাবন করার ক্ষমতা তখনও তাদের থাকে না। কঠিন বাস্তবের এই পৃথিবীতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা কতটা কঠিন তা তারা বুঝতে পারে না । আবেগের বসে তারা বিভিন্ন ধরনের কর্মের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে। প্রেম প্রীতির মত কঠিন বন্ধনে তারা আবদ্ধ হয়ে যায়। ভালবাসার মূল্য দিতে গিয়ে তারা নিজেকে তিলে তিলে ধ্বংস করে ফেলে। তবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও অনেক মেয়েদেরকে আমরা আবেগী হতে দেখি। তারা আবেগ দিয়ে তাদের জীবনের বাস্তবতাকে মেলাতে চান। কিন্তু বাস্তবে তো আবেগ দিয়ে জীবন চলে না জীবন চলে তার নিজস্ব গতিতে জীবন চলে, অর্থের ঝণঝনানীতে।আবেগ দিয়ে পৃথিবীর ভ্রমণ করা যায় কিন্তু বাস্তবে সশরীরে পৃথিবী ভ্রমণ করতে গেলে অনেক কিছুরই প্রয়োজন পড়ে।

  • “আবেগের তাড়নায় তাড়িত হয়ে ভুল মানুষের প্রেমে, ভুল মানুষকে ভালোবেসে আজকে আমার জীবনের এই পরিনিতি। মেয়ে হয়ে জন্মেছি বলেই পৃথিবীতে এত দুঃখ”।
  •  “অভাবের সংসারে অভাবকে বিতাড়িত করতে টাকা ওয়ালা মানুষকে সঙ্গী করতে আবেগী হয়ে পড়েছিলাম। যার ফলশ্রুতিতে আমার এই পরিণতি।”
  • “রঙিন রঙিন দুনিয়াতে আজকে আছি কালকে নাই হাসি গানে ফুর্তি করে যাই। স্বপ্নের পৃথিবীতে তুমি আমি দুজন মিলে চলনা ঐ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে যাই।”
  • “আজকের মৃদু হাওয়া যেন আমার হৃদয়ও মনকে চাঙ্গা করে দিয়েছে, বারবার তোমার কাছে ছুটে যেতে মন চাইছে”।
  •  “তোমাকে কাছে পেতে বারবার মন চাইছে রাত বারোটা হয়েছে তো কি হয়েছে, ছুটে চলে এসো আমার কাছে, আমি আছি তোমার অপেক্ষায় রাত যত গভীর হোক না, কেন বসে থাকব তোমার প্রতীক্ষায়”।
  • “স্বপ্নের পৃথিবীতে তুমি আমি দুজনে উড়ে যাব নীল আকাশে ডানা মেলে পাল তুলে। ঘুরে বেড়াবো এক দেশ থেকে আরেক দেশে। ঘুড়ি উড়াবো রঙিন আকাশে।”

 মেয়েদের জীবন নিয়ে কিছু কথা

মেয়েদের জীবন যেন সফরকারি জীবন। সফর করতে করতে একটি জীবন, একটি মেয়ের জীবন শেষ হয়ে যায়। সফরকারীরা যেমন এক জায়গা থেকে এক  জায়গাতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে ঠিক তেমনি মেয়েরাও কখনো স্বামীর বাড়িতে কখনো বাবার বাড়িতে, কখনো ভাড়া বাসায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে। এভাবে করতে করতে এক সময় তারা পৃথিবীর মায়া ছেড়ে পরলোক গমন করে। এটাই হচ্ছে মেয়েদের জীবন। কখনো বাবা মায়ের পাখায় ভর করে চলতে হয় আবার কখনো স্বামীর পায়ের পাখায় ভর করে নিজেকে মেলে ধরতে হয়। তবে বর্তমান সময়ে মেয়েরা আজকে অনেক স্বাধীনতা লাভ করেছে। নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে। নিজেকে বিভিন্ন স্থানে মেলে ধরার চেষ্টা করছে। নিজেদের প্রতি আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়ে গেছে। তারা এখন সমাজের প্রতিটি রন্দ্রে রন্ধ্রে নিজেদের প্রতিভার জানান দিচ্ছে। আজকে মেয়েরা পাইলট হয়ে আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে। দেশ-বিদেশে বিভিন্ন বড় বড় পদে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছে। আজকে নারীদের রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে দেশ পরিচালনা করছে। তাই আসুন সকল মেয়েদের প্রতি আমাদের আহ্বান আপনারা নিজেকে বাস্তবতার এই পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করুন। আপনি প্রতিষ্ঠিত হলে আপনার সন্তান এমনিতেই প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশ ও জাতির উন্নতি সাধিত হবে এবং আমাদের বাংলাদেশ এক সময়ে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *