ইফতার নিয়ে স্ট্যাটাস, কিছু কথা ও হাদিস ২০২৫

“আহালান সাহালান খোশ আমদেদ মাহে রমজান” পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকের প্রতিবেদন। আজকের প্রতিবেদনের আলোচ্য বিষয় যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বর্তমান সময়ে। এই পবিত্র মাহে রমজান মাসে আমরা বর্তমান সময়ে পবিত্র মাহে রমজানের ইবাদত বন্দেগির মধ্য দিয়ে সময়কে অতিবাহিত করতেছি। রমজানের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত রয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে ইফতার গ্রহণ করা। সারাদিনপানাহার থেকে নিজেকে বিরত রেখে সূর্যাস্তের সময় রোজাদার ব্যক্তিরা যে খাবার গ্রহণ করে ইসলামী পরিভাষায় সেটি হলে ইফতার। রমজান মাসে ইফতার গ্রহণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।
আপনারা অনেকেই অনলাইনে এসে মাহে রমজানের ইফতার নিয়ে তথ্য অনুসন্ধান করেন। আবার অনেকেই পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার নিয়ে ইফতার নিয়ে স্ট্যাটাস প্রদান করতে চান। আপনাদের সুবিধার্থে আমরা আমাদের আজকের এই লিখনীতে সুন্দর সুন্দর কিছু ইফতার নিয়ে স্ট্যাটাস এর ধারণা প্রদান করব। যেগুলো থেকে আপনারা আইডিয়া নিয়ে সুন্দর সুন্দর স্ট্যাটাস তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ আপনার বন্ধু বান্ধবের কাছে শেয়ার করতে পারেন। আশা করছি আপনারা প্রতিবেদনটির শেষ পর্যন্ত পাঠ করলে এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আপনারা পেয়ে যাবেন।
ইফতার নিয়ে এসএমএস/ মেসেজ
পূর্বের দিনে কোন দিবস বা কোন বিশেষ আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে চিঠির মাধ্যমে কাউকে শুভেচ্ছা জানানো। কিন্তু বর্তমান সময়ে আধুনিক যুগে বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করেন শুভেচ্ছা বার্তা বা মেসেজ পাঠানো হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বার্তা পাঠানোর প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও রয়েছে whatsapp, email, fax ,টেলিগ্রাম, টুইটার, প্রিন্টারেস্ট এর মত বেশ কিছু যোগাযোগ মাধ্যম। প্রতিনিয়তই আমরা বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের প্রিয়জনের সাথে এই মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে যোগাযোগ স্থাপন করে থাকি। বর্তমানে আমরা পবিত্র মাহে রমজান মাসে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করতেছি, এ কারণে অনেকেই বিভিন্ন বার্তা প্রেরণ করছেন। সে সম্পর্কে ধারণার জন্য অনেকেই অনলাইনে এসে এসব বিষয়ের ধারণা পেতে চান। আমরা আমাদের প্রতিবেদনের এই অংশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করার জন্য পবিত্র মাহে রমজানের ইফতার উপলক্ষে কিছু বার্তা বা মেসেজ উল্লেখ করছি।
- “পবিত্র মাহে রমজান আসছে খুশি খুশি লাগছে, রমজানের এই বারোটা ছড়িয়ে দিচ্ছি সকলের মাঝে”– সবাইকে রমজানুল মোবারক।
- “রমজান মাসে বেশি বেশি দান করে, নিজের অর্থ সম্পদের যাকাত প্রদান করুন” —-সবাইকে রমজানুল মোবারক বাদ।
- “রহমত, মাগফেরাত, নাজাত এর বারতা নিয়ে এসেছে রমজান, পূর্ণ হোক সকল আশা খোদার কাছে এই মোদের আহ্বান”— খোশ আমদেদ মাহে রমজান।
- “রমজানের পবিত্রতা ছড়িয়ে দিন সবার মাঝে, জীবনের গুণগুলো করে নেব মাফ মহান রব্বুল আলামীনের কাছে”— খোশ আমদেদ মাহে রমজান।
- “নাজাতের সুযোগ আছে এই রমজান মাসে,ইবাদত করে তাই ক্ষমা চেয়ে নেব আল্লাহর কাছে” — খোশ আমদেদ মাহে রমজান।
ইফতার নিয়ে কিছু হাদিস
মহান রাব্বুল আলামিন যেসব বাণী অবতীর্ণ করেছেন সেগুলো কুরআন মাজিদে লিপিবদ্ধ করা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে বহু নবী দুনিয়াতে প্রেরণ করেছিলেন কুরআন মাজীদের এই বানীগুলো মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা প্রেরণ করেছিলেন। আমরা শেষ নবীর উম্মত হিসেবে নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম যে সকল কাজ করার জন্য আমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন সেগুলো হাদীস শরীফে লিপিবদ্ধ রয়েছে। যেগুলো অনুসরণ করা আমাদের জন্য সুন্নত। আমরা আমাদের প্রতিবেদনের এই অংশে নবী করীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম ইফতার নিয়ে যে সকল বাণী আমাদের জন্য প্রদান করেছিলেন সেগুলো উল্লেখ করবো।
- আল্লাহ রাসুল বলেন, “মুসলমানগণ ততক্ষণ পর্যন্ত কল্যাণে থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা দ্রুত ইফতার গ্রহণ করবেন” –বুখারি শরিফ ও মুসলিম হাদিস
- রাসূলুল্লাহ সাল্লাম এরশাদ করেন, “তোমরা যখন ইফতার করবে অবশ্যই খেজুর কিংবা খোরমা দিয়ে ইফতার করবে., কারণ তাতে বরকত রয়েছে। আর যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে পানি দিয়ে ইফতার করবে কারণ পানি হল পবিত্রতাকারী”– তিরমিজি
- মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেন, “নিশ্চয়ই রোজাদার ব্যক্তিদের ইফতারের সময় এমন একটি দোয়া রয়েছে, যা কখনো ফিরিয়ে দেওয়া হয় না”– হাদিস ২৯
- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালাম বলেন, “যে ব্যক্তি রোজাদার ব্যক্তিকে পানি পান করাবে, আল্লাহতায়ালা তাকে এমন পানি পান করাবেন, সেই ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ না করা পর্যন্ত আর কখনোই পিপাসিত হবেন না”– কানজুল উম্মাল
- আল্লাহর রাসূল বলেন, “কোন ব্যক্তি যদি রোজাদার ব্যক্তিকে তৃপ্তি সহকারী ইফতার গ্রহণ করায়, তাহলে সে তার জীবনের গুনাহ গুলো মাফ পাবে এবং জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তি লাভ করবে”।
ইফতার নিয়ে কিছু কথা
পবিত্র মাহে রমজান মাসে সারাদিন পানাহার এবং স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থেকে সূর্যাস্তের সময় ইফতার গ্রহণ করা হয়ে থাকে। এই ইফতার একজন মুসলমানের জন্য অত্যন্ত বরকতময় খাবার। আমাদেরকে যথাসময়ে ইফতার গ্রহণ করতে হবে। ইফতারের বিষয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কতগুলো দিক রয়েছে , যেগুলো অনুসরণ করা আমাদের প্রত্যেকটি মুসলমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন, “ইফতার একটি বরকতময় খাবার, যার প্রতিটি দানায় আল্লাহর রহমত রয়েছে”। আর এক হাদিসে তিনি উল্লেখ করেছেন. “তোমরা ইফতারের বিষয়ে কখনো দেরি করিও না, ইফতারের সময় মহান রাব্বুল আলামিন দোয়া কবুল করে নেন”। সুতরাং আমরা পবিত্র মাহে রমজান মাসে যারা সিয়াম সাধনা করছি তারা যথাসময়ে ইফতার গ্রহণ করব এবং ওই সময়ে বেশি বেশি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে দোয়া প্রার্থনা করব। যাতে আমাদের পূর্ববর্তী গুনাহ গুলোকে মহান রাব্বুল আলামিন ক্ষমা করে দেন। পাশাপাশি আমরা রোজাদার ব্যক্তিদেরকে এই সময়ে ইফতার করানোর চেষ্টা করব এতে করে আমরা ঐ ব্যক্তির সিয়াম পালন করার যে সওয়াব পাবে সমপরিমাণ সওয়াব আমরা আমাদের আমলনামায় লিপিবদ্ধ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইফতার নিয়ে স্ট্যাটাস
বর্তমান সময়ে যে কোন দিবস, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, ধর্মীয় রীতিনীতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই স্ট্যাটাস প্রদান করে থাকেন। এতে করে আমাদের মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতিগুলো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এটি একটি খুবই ভালো এবং গুরুত্বপূর্ণ দিক। আমরা জানি যে পবিত্র মাহে রমজান মাসে একটি ভালো কাজ করলে অন্যান্য মাসের ৭০ টি ভালো কাজের সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করা সম্ভব। অতএব পবিত্র মাহে রমজান নিয়ে স্ট্যাটাস প্রদান করা নিঃসন্দেহে একটি ভাল কাজ। আপনারা পবিত্র মাহে রমজান নিয়ে ইফতার, সেহরি, তারাবির সালাত আদায় সহ রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত গুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস প্রদান করতে পারেন। আমরা আমাদের প্রতিবেদনের এই অংশে পবিত্র মাহে রমজানের ইফতার নিয়ে স্ট্যাটাস উল্লেখ করব। আপনাদের যদি এই স্ট্যাটাস গুলো ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই সেগুলো শেয়ার করতে পারবেন। অথবা এখান থেকে আইডিয়া নিয়ে আরো সুন্দর স্ট্যাটাস তৈরি করতে পারবেন।
- “মসজিদের ঐ আজান শুনে করো তোমরা ইফতার, যথাসময়ে ইফতার করা আমাদের খুব দরকার”।
- “ইফতার নিয়ে কখনো মোরা করব না অবহেলা, বরকতময় এই খাবার নিয়ে করবো না ছেলে খেলা”।
- “রহমত, মাগফেরাত, নাজাত নিয়ে এসেছে রমজান, সকলে মিলে করছি আদায় আমরা মুসলমান”।
- “ইফতার করো ইফতার করো ওহে মুসলমান, তাহলে তুমি জাহান্নাম থেকে পাবে পরিত্রাণ”।
- “বেশি বেশি করে করব দোয়া ইফতারের সময়, মহান আল্লাহ যেন আমাদের দোয়া কবুল করে নেয়”
পবিত্র মাহে রমজান আমাদের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হতে চলেছে। এই পবিত্র মাসে যদি আমরা বেশি বেশি ইবাদত করে মহান রাব্বুল আলামীনকে সন্তুষ্ট করতে না পারি, তাহলে আমাদের জন্য একটি চরম ব্যর্থতা হবে। কারণ আমরা ক্ষণস্থায়ী সময়ের জন্য পৃথিবীতে এসেছি কখন আমরা দুনিয়া থেকে চলে যাব কেউ তা বলতে পারিনা। আগামী মাহে রমজান আমাদের জীবনে আমরা পাব কিনা আমরা কেউই জানিনা। সুতরাং সময় এসেছে এই রমজানেই বেশি বেশি ইবাদত করে মহান রব্বুল আলামীনকে সন্তুষ্ট করার। ইফতারের সময়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের কাছ থেকে ধৈর্যের পরীক্ষা নেন এবং ফেরেশতাদেরকে বলেন, দেখো আমাদের আমার বান্দারা সারাদিন না খেয়ে থেকেও আমার অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে, খাবার নাড়াচাড়া করছে তবুও একটি খাবার দ্বারা মুখে দিচ্ছে না। দেখো দেখো ফেরেশতারা দেখো আমার বান্দারা আমাকে কতটা ভয় করে। আল্লাহতালা খুশি হয়ে তখন বলবেন, আমি এই সকল বান্দাদেরকে অবশ্যই অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করাবো।