Biography

ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস এর কর্মজীবন,পরিবার এবং জীবনী

নোবেল বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশী একজন ব্যক্তি হলেও তিনি একজন আন্তর্জাতিক মানের বিশিষ্ট সুধীজন। তিনি ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষার বিভাগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অতি সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২৪ সালের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি দায়িত্বভার গ্রহন করেছেন।তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর থেকেই বাংলাদেশের আমুল পরিবর্তন দেশের জনগণ লক্ষ্য করতে পারছেন। সাথে সাথে বৈদেশিক পারস্পরিক সম্পর্ক রক্ষা করাতে বেশ ভূমিকা পালন করছেন। এতে করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাত।অনেক সমৃদ্ধশালী হয়েছে।

ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস একজন গুণী ব্যক্তি হওয়ার কারণে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে উনাকে নিয়ে বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সে কারণেই অনেকেই অনলাইনে এসে গুনী এই ব্যক্তির জীবনী এবং কর্মজীবন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে অনলাইনে অনুসন্ধান করছেন। আপনারা যারা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের জীবনী সম্পর্কে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন আমরা আপনাদের জন্য আজকের এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছি। যা থেকে আপনি নোবেল বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস এর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।

ডঃ মোঃ ইউনূস এর জীবনী

ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস ২৮ জুন ১৯৪০ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস জোভরা গ্রামের একজন দরিদ্র পরিবারের সন্তান। যে কারণেই তিনি দারিদ্রতার বিষয়ে বেশ সংগ্রাম করে জীবনকে সাজিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন এবং দেশের মানুষকে দারিদ্রতার হার থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। যার জন্য তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যাতে করে দেশের দরিদ্র শ্রেণীর মহিলারা ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহণ করে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন। তিনি লক্ষ্য করেছিলেন যে গ্রামের মহিলারা বাশেঁর আসবাবপত্র তৈরি করতে উচ্চ হাড়ে সুদের ঋণ গ্রহণ করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। সেই থেকে তিনি ঐ সকল মহিলাদের স্বল্প সুদে ঋণদান করে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস তার নিজের অর্থ থেকে গ্রামের ৪২ জন মহিলাকে সব ৫৬ টাকা করে ঋণ দান করেছিলেন। প্রতিদিন ০.৫০ টাকা লাভ করেন। ১৯৭৬ সালের ডঃ মোঃ ইউনুস জনতা ব্যাংক থেকে একটি ঋণ গ্রহণ করেন, সেই ঋণ গ্রহণ করে ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস এই পাইলট প্রকল্পটি দরিদ্র বাংলাদেশের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক হিসেবে কাজ শুরু করে। বর্তমানে বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ ঋণগ্রহীতা রয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের।

ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস কোন বিষয়ে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন?

গ্রামীন সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ডঃ মোঃ ইউনুস নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। গ্রামে দরিদ্র মানুষেরা যাতে শান্তিতে স্বল্প সুদে ঋণ গ্রহণ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। সে কারণে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রাথমিক পর্যায়ে স্বল্প হারে স্বল্প সংখ্যক মহিলাদেরকে ঋণ প্রদান করে তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংক মানুষের কল্যাণের দিকে কাজ করে যাচ্ছে। সেই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক নোবেল পুরস্কারে ঘোষিত হয়েছেন ডঃ এফ মোহাম্মদ ইউনুস।

ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস কত সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন?

২০০৬ সালে ডঃ মোঃ ইউনুস গ্রামীণ শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ক্ষুদ্র ঋণ ও ক্ষুদ্র মধ্যবিত্ত পরিবারের স্বল্প সুদের ঋণ প্রদান করেছেন এবং গ্রামের মানুষ যাতে শান্তিতে পরিবারকে পরিচালনা করতে পারেন সে কারণেই এই উদ্যোগ তিনি গ্রহণ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে পুরস্কৃত করেন। এছাড়াও তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম এবং কংগ্রেসানাল গোল্ড মেডেল পেয়েছিলেন।

ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস এর পরিবার

ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। উনারা নয় ভাই- বোন ছিলেন। যার মধ্যে তিনি তৃতীয় তম।তার  পিতার নাম হাজী দুলাল মিয়া সওদাগর এবং তাঁর মাতার নাম সুফিয়া খাতুন। তাঁর পিতা একজন জহুরী ছিলেন। তাঁর শৈশবকাল কাটে একটি গ্রামে। গ্রামের লামা বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় তিনি পড়াশোনা করেছেন। বিদ্যালয় জীবনে তিনি এখন স্কাউট বয় ছিলেন। পাশাপাশি তিনি সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। নাটকের জন্য তিনি পুরস্কারও জিতেছিলেন। ১৯৯৭ সালে ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৬১ সালে তিনি মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।

 ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস এর কর্মজীবন

সময়ের সাথে সাথে ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস বিভিন্ন কর্ম ক্ষেত্রে সাথে জড়িত হয়ে পড়েছিলেন। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হওয়ার পর থেকেই তিনি বিভিন্ন মুখী কর্মের সাথে জড়িত হয়েছেন। এমনকি তিনি গ্রামীণ সফটওয়্যার লিমিটেড, গ্রামীণ সাইবার নেট লিমিটেড এবং গ্রামীন নেটওয়ার্ক লিমিটেড,গ্রামীন লিমিট ওয়্যার লিমিটেড এর মতো প্রকল্প গুলিতে কাজ করেছেন। পাশাপাশি গ্রামীণ টেলিকম অর্থাৎ গ্রামীণফোন ( জিপি ) বাংলাদেশের বৃহৎ বেসরকারি ফোন কোম্পানির সাথেও ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের অংশীদারিত্ব রয়েছে। ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা তিনি যে সকল বড় বড় কিছু উদ্ভাবন করেছেন তার উদ্ভবনি শক্তির কাছে আমরা সকলেই ছাত্র। বর্তমানে তিনি ২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা  হিসেবে কর্মরত রয়েছেন এবং দেশকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করে সুনাম কুড়িয়েছেন।

ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন কবে?

২০২৪ সালের ০৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। বাংলাদেশে তখন একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে তৎকালীন সরকার প্রধানকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্ররা ডঃ মোহাম্মদ ইউনুসকে অন্তর্ভুক্তি কালীন সরকার প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করেন। পরবর্তীতে ৮ ই আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি শপথ গ্রহণ করেন।নোবেল বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস শান্তিতে নোবেল বিজয়ের পরে বিশ্বমঞ্চে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছেন।সারা বিশ্বে তার ব্যাপক সুনাম রয়েছে। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান উপদেষ্টা হওয়ায় সারা বিশ্ব থেকে বাংলাদেশের জন্য বিনিয়োগের পুরো  আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।অতি সম্প্রতিক সময়ে চীনের সাথে বাংলাদেশের বেশ কিছু চুক্তি হয়েছে।  যাতে করে বাংলাদেশ স্বাবলম্বী হতে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *