Happy Valentines day 2025

আজ ভ্যালেন্টাইন ডে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ২০২৫

বিশ্বের কয়েকটি দেশে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস পালিত হয়ে থাকে। এই দিবসকে সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন দিবস হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয় হয়েছে। এটি এটি একটি রোমান সম্প্রদায়ের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। এটি একটি বাৎসরিক উৎসবের দিন ও বলা হয়। প্রতিবছর ১৪ ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবস পালিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশেও এই দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। বর্তমান সময়ের যুবক যুবতীরা ভ্যালেন্টাইনস ডে উৎসাহের সাথে উদযাপন করে থাকে। ভ্যালেন্টাইন ডের একটি করুন ইতিহাস থাকলেও পরবর্তীতে এটি প্রেম ভালোবাসার একটি দিবসে পরিণত হয়েছে। এই দিনে প্রেমিক-প্রেমিকারা উভয়ের মধ্যে উপহার সামগ্রী আদান প্রদান করে থাকেন। এটি রোমান সম্প্রদায়ের একটি কালচার হলেও বর্তমান বিশ্বব্যাপী এর ব্যাপকতা রয়েছে।

আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে সারা বিশ্বে। এই কর্মসুচি গুলোর মধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আতশবাজি এবং বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে বিশেষ বিশেষ কিছু আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে। আমরা আজকে আমাদের প্রতিবেদনে ভ্যালেন্টাইন্স ডে বা বিশ্ব ভালোবাসা দিবস নিয়ে আপনাদের সামনে কিছু তথ্য উপস্থাপন করব। যেগুলো আপনার জানার প্রয়োজন রয়েছে। আশা করছি এ প্রতিবেদনটি আপনারা মনোযোগ সহকারে পাঠ করবেন।

আজ বিশ্ব ভালবাসা দিবসের আয়োজনে যা যা থাকছে

বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গণমাধ্যমের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। গণমাধ্যম কর্মী গুলো সারা দেশব্যাপী আজকে তথ্য সংগ্রহ করবেন এবং তা প্রকাশিত করবেন। বিভিন্ন ফুলের দোকান, পোশাক সামগ্রীর দোকান, ফাস্টফুডের দোকান, বিভিন্ন টুরিস্ট হোটেল গুলোতে বিভিন্ন অফার চালু থাকছে। এই বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের নাটক, সিনেমা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে নতুন সিনেমা প্রদর্শিত হচ্ছে। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিশেষ বিশেষ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেঁ শোভাযাত্রা বিজয় মিছল এবং উপহার প্রদানের বিশেষ অনুষ্ঠান।

ভ্যালেন্টাইন্স ডে এর ইতিহাস

রোমান সম্প্রদায়ের তৎকালীন রোমান সম্রাট ক্লোডিয়াস তখনকার সময়ের সেনাবাহিনীরদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার বিষয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। এ সময় তিনি মনে করতেন সেনাবাহিনীদের বিবাহ হলে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে সফলতা লাভ করতে পারবে না। কারণ বিবাহ বন্ধন এর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা অনেকখানি বেড়ে যায়। সন্তানদের প্রতি মায়া মহব্বত অনেক গুণ বেড়ে যায়। ফলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা যুদ্ধক্ষেত্রে অমনোযোগী হতে পারে এবং সফলতা আসার সম্ভাবনা কমে যায়। সুতরাং তিনি মনে করেন সেনাবাহিনীদের বিবাহ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু তখনকার সময়ের সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামের এক যুবক যিনি একজন পাদ্রী ছিলেন। তিনি তৎকালীন রোম সম্রাটের এই ঘটনাকে অস্বীকার করে গোপনে গোপনে সেনাবাহিনীর সদস্যদের বিয়ের কাজে সহযোগিতা করতেন এবং সেনাবাহিনী সদস্যদেরকে তিনি বিভিন্নভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে বিয়ে দিতেন কোন এক সময়ে রোমান সম্রাট  ক্লোডিয়ার্স এর কাছে সে কথা পৌঁছে যায় এবং তিনি ভ্যালেন্টাইন্সকে কারাবন্দি করে রাখেন। ওই সময়ে কারা বন্দি থাকা অবস্থায় সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে অনেক যুবতী মেয়েরা দেখতে যেত। সেই সময়কার কারারক্ষীর একটি মেয়ে ছিল। যিনি ভ্যালেন্টাইনকে দেখতে যেত। এক সময়ে কারারক্ষীর মেয়ে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন এর প্রেমে পড়ে যায় এবং আস্তে আস্তে তারা বিবাহের সাথে জড়িত হয়ে পড়ে। এ কথা প্রকাশিত হয়ে গেলে রোমান সম্রাট আরো ক্ষিপ্ত হয়েছেন valentine কে মৃত্যুদণ্ডের দণ্ডিত করে। সেই সময়টা ছিল ১৪ই ফেব্রুয়ারি। পরবর্তীতে রোমান সম্রাট পরিবর্তিত হলে তখনকার নতুন সম্রাট নির্বাচিত হলে যুবতীদের ভালবাসা আর সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের প্রতি আগ্রহ দেখে এবং তাদের ভালোবাসাকে মর্যাদা দিতে গিয়ে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইনের নামে নামকরণ করে ভ্যালেন্টাইন ডে বা বিশ্ব ভালোবাসা দিবস রাখা হয়। তখন থেকে আজ পর্যন্ত ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা হ্যাপি ভ্যালেন্টাইনস ডে পালিত হয়ে আসছে। , প্রথম দিকে বিস্তৃতি কম থাকলেও বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বে ভ্যালেন্টাইনস ডে পালিত হয়ে আসছে।

ভ্যালেন্টাইন্স ডে এর শুভেচ্ছা বার্তা

আমরা আমাদের প্রতিবেদনের এই অংশে ভ্যালেন্টাইনস ডে উপলক্ষে কিছু শুভেচ্ছা বার্তা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি। এই শুভেচ্ছা বার্তাগুলো আপনারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার করে আপনাদের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজনকে শুভেচ্ছা জানাতে পারবেন। বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকে সকল প্রিয়জনের মধ্য দিয়ে উপস্থাপন করার সুযোগ করে দিয়েছে। তাই আপনি ফেসবুক ব্যবহার করে ভালবাসার এই দিনে শুভেচ্ছা জানাতে ভুলবেন না।

“বসন্তের এই দিনে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে তোমাকে জানাচ্ছি উষ্ণ অভিনন্দন। “হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন্স ডে”।

“সকল বন্ধুবান্ধব মিলে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে একসাথে ঘুরতে ফিরে খুবই ভালো লাগছে। হে প্রিয় বন্ধু, তোমার অনুপস্থিতিতে কিছুটা হলেও মন খারাপ হচ্ছে। তুমি বাসায় থেকে আমাদের আনন্দের সাথে শামিল হতে পারেএই এসএমএসের মাধ্যমে”

“তোমার সাথে প্রতিদিন কাটালেও তোমাকে ভালোবাসার আগ্রহ আমার একটুও কমবে না। তারপরেও বলবো আজকের এই বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে তোমার সাথে কাটানো সময় গুলো একেবারে আলাদা”।

“ভালোবাসা মানেই একটি স্বর্গীয় অনুভূতি, তোমাকে ভালোবেসে আমি সেই স্বর্গীয় অনুভূতি সব সময় পেয়ে থাকি। তাই বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে তোমাকে জানাচ্ছি অন্তরের অন্তস্থল থেকে শুভেচ্ছা।–”শুভ হোক বিশ্ব ভালোবাসা দিবস”

বিশ্ব ভালোবাসা দিবস সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

বিশ্ব ভালোবাসা দিবস অথবা ভ্যালেন্টাইনস ডে পশ্চিমা সংস্কৃতির একটি দিন।পশ্চিমা সংস্কৃতির যে সকল দেশ রয়েছে পূর্বে তারাই সেই সকল দেশের ভ্যালেন্টাইনস ডে পালন করে থাকতো। এবং সেটি ছিল বিবাহিত নারী-পুরুষদের একটি বিশেষ দিন। কিন্তু সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস এখন বিশ্বের বেশ কিছু দেশে পালিত হয়। বাংলাদেশেও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ব্যাপকভাবে পালিত হয়। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে প্রায় আসে ৮০শতাংশ মানুষ মুসলমান মুসলিম ধর্ম অনুসারী। মুসলিম ধর্ম অনুযায়ী পশ্চিমা সংস্কৃতির এই দিবস বাংলাদেশের পালন করা একেবারেই হারাম। আমরা মুসলিম ধর্ম অনুসারী যারা তারা সংস্কৃতির এই দিনটিতে কোন ধরনের উদযাপনের ব্যবস্থা যাতে না করি। সেদিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি থাকতে হবে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন ধরনের পার্কে, হোটেল, মোটেল রেস্তোরাতে অবাদে তরুণ- তরুণীরা বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বেহায়াপনা করে যাচ্ছে। যেটা ইসলাম কখনোই সমর্থন করে নাই আর করবে না। আমাদেরকে মানুষদেরকে ভালবাসতে হবে। আমাদের একে অপরের প্রতি ভালোবাসা থাকাটা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। ভালোবাসা ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না।

এ সম্পর্কে হাদিসে  বর্ণিত রয়েছে হযরত মু’আজ ইবনে জাবাল রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল সাঃ কে বলতে শুনেছি, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় পরষ্পরকে ভালোবাসে, আমার  সন্তুষ্টির আশায় পরষ্পর বৈঠকে মিলিতে হয়, আমার সন্তুষ্টির কামনায় পরষ্পর দেখা সাক্ষাৎ করে এবং আমার ভালোবাসার জন্যই নিজেদের ধন সম্পদ ব্যায় করে, তাদের ভালোবাসা আমার জন্য ওয়াজিব হয়ে যায় ( মুসলিম )।

আমরা মুসলিম ধর্ম অনুসারী হয়ে পশ্চিমা সংস্কৃতির এই দিবস সম্পর্কে সকলকে অবহিত করি এবং সকল প্রকার বেহায়াপনা থেকে আমাদের নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করি। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে পরিবার-পরিজনদেরকে ভালবাসুন, মা-বাবাকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করুন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃএর ওপর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করুন। সকলকে শালীনতার সহিত বিশ্ব ভালোবাসা দিবস পালন করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে। আপনি নিজে ভাল কাজ করুন এবং অপরকে ভালো কাজ করার বিষয় উৎসাহী করে তুলুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *