লাইলাতুল কদরের রাত চেনার আলামত ২০২৫

লাইলাতুল কদরের রাত চেনার আলামত ২০২৫ঃ আরবি বৎসরের বারটি মাসের মধ্যে পবিত্র মাহে রমজান মাস একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ইবাদত পূর্ণ মাস। সারা বিশ্বের মুসলমান ধর্মানুসারীদের পবিত্র এই মাসের জন্য সমস্ত মুসলমান উন্মাগণ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন। যেন এই মাসের ইবাদতের মধ্য দিয়ে মহান রব্বুল আলামীনকে খুশি ও রাজি করাতে পারেন এবং এই মাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী ১১ টি মাস এই মাসের মাহাত্মকে লালন করে চলতে পারেন। পাশাপাশি এই মাসের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের মধ্য দিয়ে তার জীবনের পরবর্তী গুনা গুলোকে মহান রাব্বুল আলামিন এর কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে পারেন। এই রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত হল লাইলাতুল কদর বা শবে কদর।
সুপ্রিয় সুধী, আপনারা যারা অনলাইনে এসে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন আপনাদেরকে আমাদের ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে স্বাগত জানিয়ে আমরা আজকের প্রতিবেদনটি সাজিয়েছি। আমরা আমাদের আজকের প্রতিবেদনটি কদরের রাত চেনার উপায় বা আলামত কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আপনাদের উপস্থাপন সামনে করব। আশা করছি আপনারা প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত অধ্যায়ন করবেন এবং এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন ন।
লাইলাতুল কদর কবে থেকে?
পবিত্র মাহে রমজানের একটি অতিব গুরুত্বপূর্ণ এবং মহিমান্বিত একটি রাত লাইলাতুল কদর। এই লাইলাতুল কদর পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে মাহে রমজানের শেষ দশকের সাতটি রাতকে তালাশ করতে হবে। অর্থাৎ রমজানের মাগফেরাতের অংশের বিজোড় রাত্রিগুলোর মধ্যে লাইলাতুল কদর পালিত হবে। অনেকেই পবিত্র মাহে রমজানের ২৭ শে রমজানের রাত্রিতে লাইলাতুল কদর নির্ধারণ করে ইবাদত বন্দেগী করে থাকেন। এ সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, “তোমরা যারা লাইলাতুল কদর পেতে চাও তাহলে অবশ্যই রমজানের শেষ দশকের বিজোড় গুলোতে অনুসন্ধান করো।” পাশাপাশি আবার বিভিন্ন হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, উল্লেখিত বিষয় অনুযায়ী শবে কদর বা লাইলাতুল কদর সম্পর্কে ২৭শে রমজানের রাত্রিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
লাইলাতুল কদরের সালাত কত রাকাত?
লাইলাতুল কদরের সালাত আদায় করার জন্য আপনাকে বিশেষ কোনো পদ্ধতি অনুসরণ করার প্রয়োজনীয়তা নেই। অনেকেই এ সম্পর্কে অবগত রয়েছেন যে তাহাজ্জুদের সালাত আদায়ের পদ্ধতিতে লাইলাতুল কদরের সালাত আদায় করা যাবে। আবার এ সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত রয়েছে যেভাবে তা হল, সাধারণত আমরা যে ধরনের আদায় করে থাকি সেভাবেই লাইলাতুল কদর সালাত আদায় করা যাবে। সে ক্ষেত্রে সূরা ফাতিহার সাথে সূরা কদর, আয়াতুল কুরসি মিলিয়ে পাঠ করতে হবে। এটা করা উত্তম কাজ। লাইলাতুল কদরের রাতে আপনি সালাতুল হাজত, সালাতুল তাওবা আদায় করে নিতে পারেন। সালাতুল কদরের সালাত আদায়ের জন্য বিশেষ কোনো সূরা অবতীর্ণ করা হয়নি। সুতরাং আপনি লাইলাতুল কদরের সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে সুরা ফাতিহার সাথে যে কোন সূরা পাঠ করেও সালাত আদায় করতে পারবেন।সেক্ষেত্রেই এ রাত যেহেতু একটি মহিমান্বিত রাত এবং ইবাদত কবুল হওয়ার রাত, এ রাতে বেশি বেশি দোয়া পাঠ করে মহান রব্বুল আলামীনের কাছে নিজেকে সোপর্দ করুন।
লাইলাতুল কদরের রাত চেনার আলামত ২০২৫
যেকোনো বিষয়ে আমাদের জানার আগ্রহ থাকা জরুরি একটি বিষয়। ঠিক তেমনি আপনি যেহেতু লাইলাতুল কদরের রাত্রিতে ইবাদত করার জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে নিজেকে উপস্থাপন করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন সেহেতু আপনাকে লাইলাতুল কদরের রাত সম্পর্কে জানা জরুরী। লাইলাতুল কদরের রাত্রিতে পৃথিবীতে আবহাওয়া কেমন হবে এবং কি কি লক্ষণ উপলক্ষ্য করা যাবে, আমরা সে সম্পর্কে প্রতিবেদনের এই অংশ উপস্থাপনা করব। হাদিস শরীফে এ সম্পর্কে বিশদ আলোচনা রয়েছে। আমরা মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর লাইলাতুল কদরের রাত্রি চেনার জন্য যে কয়েকটি লক্ষণ উল্লেখ করা ,সেগুলো, প্রতিবেদনের মাধ্যমে উপস্থাপন করছি।
রাসূল সাঃ বলেছেন,
- লাইলাতুল কদরের রাত্রিতে রাতটি গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে না।
- গরম বা শীতের তীব্রতা থাকবে না। অর্থাৎ নাতিশীতোষ্ণ হবে।
- মৃদু মন্দ বাতাস প্রবাহিত হতে থাকবে।
- লাইলাতুল কদরের রাত্রে ইবাদত করে মানুষ অপেক্ষাকৃত অধিক তৃপ্তি বোধ করবে।
- কোন ঈমানদার ব্যক্তিকে আল্লাহ স্বপ্নে হয়তো তা জানিয়েও দিতে পারেন।
- শবে কদরের রাত্রে বৃষ্টি বর্ষণ হতে পারে।
- সকালে হালকা আলো রশ্মি সহ সূর্যোদয় হবে যা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মত।——বুখারী শরীফ ২০২১ ও মুসলিম শরীফ ৭৬২
লাইলাতুল কদরের রাত চেনার আলামত

লাইলাতুল কদরেআমাদের করণীয় কি?
পবিত্র মাহে রমজান মাসের ০১টাকা দান করলে অন্যান্য মাসের ৭০ টাকা দানের সাওয়াব পাওয়া যায় । পাশাপাশি একটি ভাল কাজ করলেঅন্যান্য মাসের ৭০ টি ভালো কাজের সাওয়াব পাওয়া যায়। এ মাসের একটি নফল ইবাদত অন্যান্য মাসের সুন্নত ইবাদতের সমান। সুতারাং এই মাসের পবিত্র যে মহিমান্বিত রাত শবে কদর বা লাইলাতুল কদর, সেই কদরের রাত্রে ভালো কাজ করলেই বা ইবাদত করলে, জিকির-আজকার করলে আল্লাহতালা কি পরিমাণ সাওয়াব দিবেন তা সেই রকম রাব্বুল আলামিনই ভালো জানেন। এই রাতের সাওয়াব গুলোকে মহান রব্বুল আলামীন ৭০ গুন থেকে ৭০০ গুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করে দিয়ে বান্দার আমল নামায় লিপিবদ্ধ করে দেবেন। সুতরাং এই রাত্রে আমরা নিন্মুক্ত কাজ গুলো করতে পারি-
- কোরআন তেলাওয়াত করতে পারি।
- জিকির করতে পারি।
- তসবিহ তাহলীল করতে পারি।
- সালাতুত তাসবিহ, সালাতুত তাওবার সালাত আদায় করা যাবে।
- মহান রব্বুল আলামীনের কাছে তওবা করতে হবে।
- নিজের জন্য, পরিবারের জন্য সর্বোপরি সকল মুসলিম জাতির জন্য দোয়া প্রার্থনা করতে হবে।